মওদুদের জন্য ক্ষমা চেয়ে যা বললেন বিএনপি নেতা শাহ মোয়াজ্জেম

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন। দেশের রাজনীতিতে দুজনই আলোচিত ও সমালোচিত ব্যক্তিত্ব। দেশের প্রথম সারির রাজনীতিক এ দুজনের মধ্যে রয়েছে অনেক মিল, আবার অমিলও কম নয়।
মওদুদ আহমদ ও শাহ মোয়াজ্জেম পরস্পর বন্ধু ছিলেন। একই স্কুলে পড়েছেন। একই সঙ্গে ছাত্ররাজনীতি করেছেন। বন্ধুর মৃত্যু দাগ কেটেছে শাহ মোয়াজ্জেমের হৃদয়ে।
সম্পর্কিত খবর
বন্ধু মওদুদ আহমদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে এক ভিডিওবার্তায় প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন।
শাহ মোয়াজ্জেমের বক্তব্য হুবহু তুলে ধরা হলো— ‘কয়েক দিন ধরেই টেলিভিশন খোলা রাখি; কারণ শুনতে পেয়েছিলাম সে (মওদুদ আহমদ) মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে। একটু আগে দেখলাম সে ইন্তেকাল করেছে। সব মানুষের জন্যই মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী। একদিন না একদিন মরতে হবেই।
সে কম বয়সে মারা যায় নাই। সে আমার সমসাময়িক। আমি পচাঁশিতে পড়েছি। মওদুদও কাছাকাছি ছিল।
দুয়েক বছরের বড়ছোট হতে পারে। আমরা দীর্ঘদিনের বন্ধু। স্কুলজীবনের বন্ধু ছিলাম। তার পর সে অন্য স্কুলে চলে যায়। আমি সেন্ট গ্রেগরিতে থেকে যাই। ঢাকা কলেজে থাকতে আমার জীবনে প্রথম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন নির্বাচন করি। আমার নেতৃত্বে ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট গঠন করা হয়। আমি সাধারণ সম্পাদক পদে দাঁড়ালাম। মওদুদ বিনোদন সম্পাদক পদ চাইল। আমরা তাকে মনোনয়ন দিলাম। ১৪টি সিটের মধ্যে আমরা ১৩টিতেই জয়ী হলাম। আমি সাধারণ সম্পাদক, মওদুদ বিনোদন সম্পাদক হলো।
এর পর কখনও আমি হল সংসদ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো নির্বাচনে দাঁড়াইনি। মওদুদও সম্ভবত দাঁড়ায়নি। সে ব্যারিস্টারী পড়তে চলে গিয়েছিল লন্ডনে। সেখান থেকে আসার পর আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি। ছাত্রজীবনে, ছাত্রজীবনের বাইরেও। এরশাদের আমলে তো দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাজ করেছি। জীবনের শেষ বয়সে বিএনপিতে এসে একসঙ্গে কাজ করেছি।’
বন্ধুর প্রশংসা করে মোয়াজ্জেম বলেন, সে একজন ভালো বন্ধু। কথাবার্তায় ভালো ছিল। যুক্তি দিয়ে কথা বলত। একজন ভালো ব্যারিস্টারও ছিল। তার ব্যক্তিজীবনে কী সমস্যা ছিল, পিতার সঙ্গে কী সম্পর্ক ছিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না, বলতে চাই না। সব জানিও না। তবে এটুকু জানি— মানুষমাত্রই ভুলভ্রান্তি থাকতে পারে। তারও থাকতে পারে। আমার জীবনেও আছে। আমি কি দুধে ধোয়া? না, আমারও দোষত্রুটি থাকতে পারে। যেই দোষত্রুটির জন্য এই বয়সে আল্লাহতায়ালার কাছে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আর কিছু করার নাই।
বন্ধুর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শাহ মোয়াজ্জেম বলেন, অনেক দায়িত্বে, অনেক কাজের সঙ্গে সে জড়িত ছিল। অনেক ভালো কথা শুনেছি, অনেক খারাপ কথাও শুনেছি। এটুকুই বলব— তার সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক ছিল এবং সে দেশের জন্য ভালো করার চেষ্টা করেছে; কাজ করার চেষ্টা করেছে। আমি তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। সবাই মিলে দোয়া করি আল্লাহ তুমি তাকে মাগফিরাত দান করো, তার যদি কোনো ভুলত্রুটি থেকে থাকে, ক্ষমা করো এবং তার পরিবারের সদস্যদের শোক সহ্য করার তৌফিক দান করো৷ তার ভক্তরা, দলের নেতকর্মীরা, আমরা যেন এই শোককে শক্তিতে পরিণত করে দেশ ও মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করতে পারি— এটিই হোক আজকের দিনের শপথ।
আরো পড়ুন: মওদুদ আহমদের শেষ ইচ্ছা পূরণ হবে
পূর্বপশ্চিমবিডি/ এনএন