জনতার ধাওয়ায় পালিয়ে যাওয়া পুলিশের দুই এএসআই প্রত্যাহার

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার সাবদি এলাকায় ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ে অর্থ আদায়কালে জনতার হাতে সোর্স আটকের সময় পালিয়ে যাওয়া দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
রোববার (১৮ আগস্ট) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে তাদেরকে প্রত্যাহার করা হয়। তবে পুলিশের দাবি, প্রশাসনিক কারণে তাদেরকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সম্পর্কিত খবর
প্রত্যাহারকৃত পুলিশের দুই কর্মকর্তা হলেন- বন্দর থানার সহকারি উপ-পরিদর্শক আমিনুল হক এবং সহকারি উপ-পরিদর্শক আনোয়ার। বন্দর থানা পুলিশের অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ওসির দাবি, পরিচয় গোপন করে বিভিন্ন স্থানে অপরাধমূলক কার্যক্রমের সাথে জড়িত ছিল সোর্স শামীম। তার বিরুদ্ধে পূর্বেও মামলা ছিল। নিয়মিত মামলায় তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
দুই পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহারের বিষয়ে ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, তাদেরকে প্রশাসনিক কারণে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। তবে উর্ধতন কতৃপক্ষের নির্দেশ ব্যতীত সোর্স শামীমের সাথে সাবদি এলাকায় যাওয়া তাদের অপরাধ হয়েছে বলেও স্বীকার করেন তিনি।
এর আগে ১৭ আগস্ট রাত সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার সাবদি এলাকায় ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অজুহাতে জরিমানা করে স্থানীয় নান্নু মিয়ার মুদি দোকান থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন অভিযুক্ত এএসআই আমিনুল, এএসআই আনোয়ার ও সোর্স শামীম। বিষয়টি সন্দেহ হলে সে সময় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে স্থানীয়রা।
পরে এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে ‘ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট" বলে ধাওয়া দিলে পুলিশের দুই কর্মকর্তা পালিয়ে একটি বাড়িয়ে আশ্রয় নিয়ে বাঁচেন। এসময় সোর্সকে আটক করে গণধোলাই দেন এলাকাবাসী। পরে খবর পেয়ে বন্দর থানা থেকে ওসি এবং অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সোর্সকে আটক করে নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে জেলা পুলিশের মিডিয়া উইং কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মো: সাজ্জাদ রোমন দুই পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহারের বিষয়টি স্বীকার করে জানান, ওসির নির্দেশ ছাড়া সোর্সের সাথে ঘটনাস্থলে যাওয়া তাদের অপরাধ হয়েছে। উর্ধতন কতৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়া কোথাও যাওয়া মানে ডিপার্টমেন্টের ডিসিপ্লিন ভঙ্গ করা। সেই অপরাধে এবং প্রশাসনিক কারণে বন্দর থানা পুলিশের দুই এএসআইকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে এএসআই আমিনুল হক জেলা গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) কর্মরত ছিলেন। গত বছরের ২৬ আগস্ট রাতে শহরের খানপুর এলাকার একটি দোকানে খাবার খেয়ে বিল পরিশোধ না করার ঘটনায় তিনি দোকানিদের মারধর করলে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ডিবি পুলিশের একটি দল। ওই ঘটনায় ফাস্টফুডের মালিক জালাল উদ্দিনের স্ত্রী রিনা ইয়াসমিনের দায়ের করা মামলায় এএসআই আমিনুল হককেও আসামি করা হয়। মামলাটি বর্তমানে চলমান প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
পিপিবিডি/পিএস