নারীকে টেনে নেওয়া গাড়িটি চালাচ্ছিলেন ঢাবির চাকরিচ্যুত শিক্ষক জাফর শাহ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গাড়ির নিচে আটকে যাওয়া নারীকে টেনে প্রায় এক কিলোমিটার নেওয়া প্রাইভেট কারটি চালাচ্ছিলেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক শিক্ষক। তার নাম আজাহার জাফর শাহ। তখন গাড়িতে তিনি ছাড়া আর কেউ ছিলেন না।
শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) বেলা ৩টার দিকে চারুকলা অনুষদের সামনে জাফর শাহের প্রাইভেট কারের ধাক্কায় সামনের মোটরসাইকেল থেকে পড়ে যান ওই নারী।
সম্পর্কিত খবর
প্রাইভেট কারটি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর দিয়ে পালানোর চেষ্টা করছিল, স্তম্ভিত পথচারীরা তখন দেখছিলেন- ওই গাড়ির নিচেই আটকে রয়েছেন শাড়ি পরা এক নারী। গাড়িটি থামানোর জন্য আশপাশের মানুষ চিৎকার করে ডাকছিলেন, সিগনাল দিচ্ছিলেন, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। শেষে নীলক্ষেতের ফটক পর্যন্ত যাওয়ার পর কাপড় ছিঁড়ে ছুটে যায়।
এরপর উত্তেজিত জনতা গাড়ির নিচ থেকে ওই নারীর ক্ষতবিক্ষত লাশ টেনে বের করেন। তখন আশপাশের লোকজন ঐ চালককে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন এবং গাড়িটি ভাঙচুর করেন। পরে তাকেও চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ঢাবির সাবেক শিক্ষক বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. জাফর।
তার বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী গণমাধ্যমকে বলেন, “ক্লাসসহ অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে ২০১৮ সালে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়।”
পুলিশ জানায়, দেবর নুরুল আমিনের সঙ্গে মোটরসাইকেল করে হাজারীবাগে ভাইয়ের বাসায় যাচ্ছিলেন রুবিনা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয় আজাহার জাফর শাহর প্রাইভেট কার। এতে দুইজনই মোটরসাইকেল থেকে পড়ে যান। এ সময় প্রাইভেট কারের পেছনের বাম্পারের সঙ্গে নিহত রুবিনার জামার কাপড় আটকে যায়। তখন গাড়ি না থামিয়ে দ্রুতগতিতে চালিয়ে যান চালক। তাকে ধাওয়া করে নীলক্ষেত মোড়ের কাছে ধরে ফেলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এরপর শিক্ষার্থীরা ঐ চালককে আটক করে গণধোলাই দেন। এ সময় তিনি নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আজহার জাফর শাহ বলে পরিচয় দিয়েছিলেন।