রমনা ডিসি: গাড়ির নিচে আটকে নারীর মৃত্যু দুর্ঘটনা নয়, হত্যা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভেতরে গাড়ির নিচে আটকে যাওয়া নারীকে টেনে প্রায় এক কিলোমিটার নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় এক নারী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন নিহতের দেবর নুরুল আমিন। তবে এটি কোনো সড়ক দুর্ঘটনা নয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. শহীদুল্লাহ। তিনি বলেন, “এটি দুর্ঘটনা নয়, হত্যাকাণ্ড।”
শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৭টায় রাজধানীর শাহবাগ থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর মোহাম্মদ।
সম্পর্কিত খবর
মো. শহীদুল্লাহ বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিভাগের সাবেক সহকারী অধ্যাপক আজাহার জাফর শাহ গাড়ি না থামিয়ে বেপরোয়া গতিতে টিএসসি চত্বর হয়ে নীলক্ষেতের দিকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যান। পথচারীরা চালককে গাড়ি থামাতে বললেও তিনি থামাননি। তিনি গাড়ির গতি বাড়িয়ে চালাতে থাকেন।”
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, “টিএসসি চত্বরে শাহবাগ থানার মোবাইল টিম ও শিক্ষার্থীরা প্রাইভেট কারটির গতিরোধ করার চেষ্টা করেও থামাতে পারেনি। পুলিশ, শিক্ষার্থী ও পথচারীদের ডাক-চিৎকারে নীলক্ষেত এলাকায় সামনে থেকে প্রাইভেট কারের গতিরোধ করে জনতা। এরপর গাড়ির নিচ থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করে সঙ্গে সঙ্গে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।”
আরও পড়ুন- বিয়েতে অনুপ্রবেশ, স্নাতকোত্তর তরুণকে দিয়ে বাসন মাজালেন আয়োজকরা
এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মামলা হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, “আজাহার জাফর শাহ বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। উত্তেজিত জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে বেধড়ক মারপিট করে। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তবে প্রাইভেট কারটি জব্দ করা হয়েছে।”
চালক নেশাগ্রস্ত ছিলেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি তার সঙ্গে কথা বলতে এসেছিলাম। কিন্তু তিনি হাসপাতালে ভর্তি। সুস্থ হলে জানা যাবে। তবে এটি দুর্ঘটনা নয়, হত্যাকাণ্ড। তদন্তের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ডিসি বলেন, “ওই ঘটনার পর অভিযুক্ত শিক্ষকের স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। তার স্ত্রী তিনি বিষয়টি শোনার পর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ফোনটি বন্ধ করে দেন। এরপর আর তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।”
নিহত রুবিনা আক্তারের দেবর নুরুল আমিন বলেন, “আমার সঙ্গে মোটরসাইকেলে তেজগাঁও থেকে হাজারীবাগে বোনের বাসায় যাচ্ছিলেন রুবিনা। আমরা শাহবাগ জাদুঘরের সামনে পৌঁছালে পেছন থেকে একটি প্রাইভেটকার আমাদেরকে ধাক্কা দিয়ে শাহাবাগ থেকে নীলক্ষেত মোড় পর্যন্ত টেনে নিয়ে যায়। আমি গাড়ি থামানোর জন্য পিছন থেকে চিৎকার করছিলাম। কিন্তু চালক আমার কথা শোনেনি।”
প্রাইভেট কারের চালক জাফর শাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক (আইআর) বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক।