সাংবাদিককে দণ্ড-নির্যাতন: মদ ও গাঁজা সরবরাহকারীর খোঁজ মিলেছে

ইংরেজি দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউন ও অনলাইন নিউজপোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামকে মধ্যরাতে বাসা থেকে মারধর করে তুলে এনে মাদক পাওয়ার কথিত অভিযোগে কারাদণ্ড দেওয়ার ঘটনায় আরেক ‘নাটের গুরু’র খোঁজ মিলেছে। অধূমপায়ী আরিফের বাসায় তল্লাশি না চালিয়েই জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মধ্যরাতে বসানো সেই ভ্রাম্যমাণ আদালতে আধা বোতল মদ ও ১০০ গ্রাম গাঁজা কে সরবরাহ করলো এমন খোঁজখবরে কুড়িগ্রামের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ইন্সপেক্টর জাহিদুল ইসলামের নাম বের হয়ে এসেছে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, ওই ঘটনায় মাদকদ্রব্য সরবরাহের অভিযোগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ইন্সপেক্টর জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার (১৬ মার্চ) বিকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বেসরকারি মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রগুলোর মান উন্নয়নে সরকারি অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সম্পর্কিত খবর
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে এই ইস্যুতে প্রশ্নবাণ ছোটান সাংবাদিকরা। কুড়িগ্রামে সাংবাদিক আরিফকে নিয়ে যে ঘটনা ঘটেছে, সেখানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের স্থানীয় জেলা কার্যালয়ের যে ইন্সপেক্টর অংশ নিয়েছিলেন তিনি মদ ও গাঁজাগুলো সরবরাহ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি আপনি জানেন কিনা এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন কিনা এবং সেখানে যে সহকারী পরিচালক ছিলেন তার অনুমতি ছাড়া কীভাবে তিনি বিতর্কিত একটি অভিযানে অংশ নিলেন−স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘প্রথম কথা হলো আপনারা জানেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী সবসময় বলে থাকেন আইন সবার জন্য সমান। সে সরকারি কর্মকর্তা হোক আর সাধারণ নাগরিক হোক। আমাদের মন্ত্রণালয়ের কাছে এখন পর্যন্ত তার সম্পর্কে কোনও লিখিত বক্তব্য আসেনি। আমরা যতটুকু জানি তার বিরুদ্ধে আমাদের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এগিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আমি আবারও বলছি, যারা আইন অমান্য করবেন, তাদের শাস্তি আইন অনুযায়ী হবে।’
মদের বারগুলো বন্ধ করা হবে কিনা জানতে চাইলে এমন এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বেশিরভাগ বার হচ্ছে হোটেলকেন্দ্রিক। থ্রি স্টার, ফাইভ স্টার হোটেলের বারগুলো বন্ধ করবো কিনা। যখন হোটেলের সবকিছু বন্ধ করে দেবো, তখন সেটাও বন্ধ করা যাবে। এখনও তো সেই পরিস্থিতি আসেনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা মাদকের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। এর অংশ হিসেবে একদিকে যেমন অপারেশনাল কার্যক্রম শক্তিশালী করেছি, একইসঙ্গে মাদকাসক্তদের চিকিৎসা কার্যক্রমও শক্তিশালী করেছি। যাতে অসুস্থ মাদকাসক্তদের মূলধারায় ফিরিয়ে এনে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করা যায়।
করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক না ছড়াতেও সাংবাদিকদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান। এ বিষয়েও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ রয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএস