গাড়িচাপায় নারীর মৃত্যু: ঢাবির সাবেক সেই শিক্ষক কারাগারে মারা গেছেন

গত বছরের ২ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাস এলাকায় প্রাইভেটকার চাপায় রুবিনা আক্তার (৪৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ঢাবির চারুকলা অনুষদের সামনের রাস্তা থেকে প্রাইভেটকারের নিচে আটকে নীলক্ষেত মোড় পর্যন্ত ওই নারীকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যান ঢাবির সাবেক শিক্ষক আজহার ওরফে জাফর শাহ (৫৬)।
কারাগারে থাকা ঢাবির সেই সাবেক শিক্ষক আজহার ওরফে জাফর শাহ আজ শুক্রবার মারা গেছেন। শুক্রবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার (কেরানীগঞ্জ) থেকে অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সম্পর্কিত খবর
কেন্দ্রীয় কারাগারের কারারক্ষী মো. আলআমিন জানান, কারাগারে হাজতি হিসেবে বন্দী ছিলেন তিনি। সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়লে কারাচিকিৎসকের পরামর্শে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। জাফর শাহের বাবার নাম মাইনুদ্দিন জাহাঙ্গীর শাহ। তাঁর হাজতি নম্বর-১১৭/২৩।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জানান, কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কারারক্ষীরা অচেতন অবস্থায় সেই সাবেক শিক্ষককে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে তাঁর মৃত্যু হয়।
মৃত জাফর শাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক ছিলেন। ২০০৭-২০০৮ সালের দিকে নৈতিক স্খলনের অভিযোগে তাঁকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
ঘটনার দিন নিহত রুবিনা আক্তারের আত্মীয় নুরুল আমিন জানান, রুবিনাদের বাসা হাজারীবাগ এলাকায়। তেজগাঁও স্বামীর বাসা থেকে রুবিনাকে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে হাজারীবাগ যাচ্ছিলেন। পথে শাহবাগ থানাধীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনের রাস্তায় প্রাইভেটকারটি পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। তখন রুবিনা পড়ে গেলে প্রাইভেটকারটি তার ওপর উঠিয়ে দেয়। এতে গাড়ির বাম্পারের সঙ্গে আটকে যান তিনি। তখন তাকে টেনেহিঁচড়ে প্রায় নীলক্ষেত পর্যন্ত নিয়ে যায় প্রাইভেটকারের চালক জাফর শাহ। তখন লোকজন তাঁর পিছু নেয়। ধাওয়া দিয়ে নীলক্ষেত এলাকায় গিয়ে তাঁর গতিরোধ করে গাড়ির নিচ থেকে ওই নারীকে বের করে। ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলেও বাঁচানো যায়নি রুবিনাকে।
তখন উত্তেজিত লোকজন ওই প্রাইভেটকার চালককে গণধোলাই দেয়। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে ভর্তি করায়। পরবর্তীতে নিহত রুবিনার পরিবার মামলা করলে হাসপাতাল থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। চিকিৎসা শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।