বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করবে এই ঋণ: আইএমএফ

বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণের অনুমোদন দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। স্থানীয় সময় সোমবার (৩০ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে আইএমএফের নির্বাহী বোর্ডের সভায় ওই ঋণের আবেদন অনুমোদন করা হয়।
পরে সংস্থাটি জানায়, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা রক্ষায় সহাযতা করবে এই ঋণ। মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সম্পর্কিত খবর
সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় ওয়াশিংটনে আইএমএফের নির্বাহী বোর্ডের সভায় এই ঋণের আবেদন আনুমোদন করা হয়। আইএমএফ জানিয়েছে, আগামী ৪২ মাস ধরে মোট সাত কিস্তিতে এই ঋণ পাবে বাংলাদেশ। ঋণের গড় সুদ হবে ২.২ শতাংশ।
এছাড়া আইএমএফের এক্সটেন্ডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি (বর্ধিত ঋণ সহায়তা) এবং এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটি (বর্ধিত তহবিল সহায়তা) থেকে পাওয়া যাবে ৩.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর পাশাপাশি রেজিলিয়্যান্স অ্যান্ড সানসেইনিবিলিটি ফ্যাসিলিটির (আরএসএফ) আওতায় ১.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাওয়া যাবে।
দুর্বল মধ্যম আয়ের দেশ এবং দ্বীপ রাষ্ট্রগুলোকে সাহায্য করাই এর লক্ষ্য। এছাড়া দক্ষিণ এশিয়ায় আরএসএফ তহবিল থেকে বাংলাদেশই প্রথম সুবিধাপ্রাপ্ত দেশ বলেও জানিয়েছে আল জাজিরা।
আইএমএফ বলেছে, গত নভেম্বরে স্টাফ চুক্তির কারণে প্রথমেই ৪৭৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়ের প্রস্তাবের অনুমোদনও দিয়েছে বোর্ড।
আইএমএফ এক বিবৃতিতে বলেছে, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা, সামাজিক ও উন্নয়নমূলক ব্যয়ে সক্ষমতা তৈরিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার, আর্থিক খাত শক্তিশালী, নীতি কাঠামো আধুনিক করা এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ৪২ মাসের এই ঋণ প্যাকেজ সহায়তা করবে।
এছাড়া আরএসএফ থেকে হওয়া অর্থায়ন বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং প্রশমন প্রচেষ্টাকে সহায়তা করবে বলেও জানিয়েছে আইএমএফ।
উল্লেখ্য, বৈদেশিক লেনদেনের ঘাটতি মেটাতে গত বছরের ২৪ জুলাই আইএমএফের কাছে ঋণের আবেদন জানায় বাংলাদেশ। তবে সে সময় ঋণের পরিমাণ জানানো হয়নি। পরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, আইএমএফের কাছে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ চেয়েছে বাংলাদেশ।
এরপর ঋণের বিষয়ে আলোচনা করতে গত বছরের নভেম্বর মাসে আইএমএফের কর্মকর্তাদের একটি দল বাংলাদেশ সফর করে। সেই সময় প্রাথমিক সমঝোতায় পৌঁছায় আইএমএফ। তবে ঋণ পেতে বরাবরের মতোই বেশ কিছু সংস্কারের শর্ত বেঁধে দিয়েছিল সংস্থাটি।
বিবিসি বলছে, আইএমএফের দেওয়া শর্তের মধ্যে জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতের ভর্তুকি কমানো, টাকার বিনিময় ব্যবস্থা বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া, রাজস্ব ব্যবস্থার সংস্কার, কর আদায়ে সক্ষমতা বৃদ্ধি, ব্যাংকিং খাতের সংস্কার, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং আধুনিক মুদ্রানীতি তৈরি করা, আর্থিক খাতের দুর্বলতা দূর করা এবং নজরদারি বাড়ানোর মতো বিষয়গুলো রয়েছে।