অ্যান্টার্কটিকায়
ভেঙে পড়লো লন্ডনের সমান আয়তনের বরফখণ্ড

অ্যান্টার্কটিকায় কোটি কোটি বছর ধরে জমে থাকা হিমবাহ থেকে খসে পড়ছে বিশাল এক বরফখণ্ড। রোববার (২২ জানুয়ারি) ধসে পড়া ওই বরফখণ্ডটির আয়তন প্রায় ৬০০ বর্গমাইল বা ১ হাজার ৫০০ বর্গকিলোমিটার। যা প্রায় গ্রেটার লন্ডনের সমান।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভে (বিএএস) এ তথ্য নিশ্চিত করে।
সম্পর্কিত খবর
বিএএস বলেছে, বরফখণ্ডটির খসে পড়ার সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নয়। তাদের মতে, এটা ‘কালভিং’ নামক প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় এমনটা ঘটছে। সম্প্রতি প্রায় ১৫০ মিটার পুরু ওই হিমবাহ থেকে বরফখণ্ডটি বিচ্ছিন্ন হতে শুরু করে। এর আয়তন ১ হাজার ৫৫০ বর্গ কিলোমিটার যা যুক্তরাজ্যের রাজধানী গ্রেটার লন্ডনের আয়তন থেকে মাত্র ১৯ বর্গকিলোমিটার কম।
এর আগে, গত বছর ১ হাজার ২৭০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের আরো একটি বরফখণ্ড খসে পড়েছিলো। এরও প্রায় চার বছর আগে ২০১৭ সালে লন্ডনের প্রায় চার গুণ আয়তনের সমান বিশাল এক বরফখণ্ড অ্যান্টার্কটিকার বরফস্তর থেকে খসে পড়েছিলো।
জানা যায়, গ্রীষ্মকালে অ্যান্টার্কটিক সমুদ্রে বরফের পরিমাণ ব্যাপকভাবে হ্রাস পায়। তবে এবারের গ্রীষ্মে বরফ কমে যাওয়ার গতি ছিলো অত্যন্ত অস্বাভাবিক।
ন্যাশনাল স্নো অ্যান্ড আইস ডেটা সেন্টারের (এনএসআইডিএস) বিজ্ঞানীরা বলেন, ৪৫ বছরের মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ বরফ কমে যায় গত বছরের ডিসেম্বর মাসের শেষে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, গত কয়েক দশক ধরে অ্যান্টার্কটিকা সামুদ্রিক বরফ গলে যাওয়ার একটি রোলারকোস্টারে চড়েছে বলে মনে হচ্ছে। আর জলবায়ুর পরিবর্তন এ প্রক্রিয়ায় আরও গতি যোগাচ্ছে। সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, গলে যাওয়ার বরফখণ্ডগুলো সমুদ্রে আর ফিরে আসেনি বা নতুন করে জমাট বাঁধেনি।
ইউনিভার্সিটি অব কলোরাডো বোলডারের শিক্ষক ও এনএসআইডিএসের প্রধান গবেষক টেড স্ক্যাম্বোস বলেন, অ্যান্টার্কটিকায় যা ঘটছে তার সঙ্গে বাকি বিশ্বের তাপমাত্রাবৃদ্ধির যোগসূত্র রয়েছে। ১৯৭৮ থেকে এখনকার স্যাটেলাইট ডেটা দেখায়, ২০১৪-২০১৫ সালের মধ্যে মহাদেশটিতে রেকর্ড সংখ্যক সুউচ্চ হিমবাহ তৈরি হয়েছিলো। কিন্তু ২০১৬ সালে হঠাৎ করেই হিমবাহগুলো একে এবে সমুদ্রে ডুবে যেতে থাকে। সূত্র: সিএনএন।
পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম