বাংলাদেশে ফিরতে চান পি কে হালদার

বাংলাদেশে ফিরতে চান বলে জানিয়েছেন কয়েক হাজার কোটি টাকা ভারতে পাচারকারী পি কে হালদার ওরফে প্রশান্ত কুমার হালদার। সোমবার (১৬ মে) সকালেও ভারতীয় গোয়েন্দাদের জেরার মুখে তিনি এ কথা জানান।
বাংলাদেশে থেকে তিন হাজার ৬০০ কোটি টাকা পাচার করার ঘটনায় পি কে হালদারকে মেডিকেল চেকআপের জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ইডি বা সিবিআই কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করলে আদালতে পেশ করার আগে একবার তার মেডিকেল চেকআপ করানো হয়।
সম্পর্কিত খবর
এরই অংশ হিসেবে শনিবার (১৪ মে) গ্রেপ্তার ছয়জনকে মেডিকেল চেকআপ করানো হয়েছিলো। আগামীকাল আদালতে পেশ করা হবে তাই আজ আবার মেডিকেলে নেওয়া হয়েছিল। ইডি দপ্তর থেকে মেডিকেল চেকআপ করে ফেরার পথে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন তিনি বাংলাদেশে ফিরতে চান কি না? প্রশ্নের উত্তরে প্রথমে চুপ থাকলেও লিফটে দাঁড়িয়ে তিনি জানান, দেশে ফিরতে চান।
এর আগে কলকাতার সিজিও কমপ্লেক্সের ইডি দপ্তরে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রথমদিকে সহযোগিতা না করলেও পরবর্তীতে তিনি ইডি কর্মকর্তাদের সহযোগিতা করেন বলে জানা গেছে।
প্রথম দিকে কোনো তথ্যই পি কে হালদারের কাছ থেকে সংগ্রহ করতে পারেনি ইডি। পি কে হালদার ও তার সহযোগীদের আলাদাভাবে জেরা করা হয়।
প্রায় ৪০টিরও বেশি প্রশ্নের একটি তালিকা তৈরি করা হয়। সে অনুযায়ী পি কে হালদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রথমবার জিজ্ঞাসাবাদে পি কে হালদার খুব একটা সহযোগিতা না করলেও দ্বিতীয়বারের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ইডি কর্মকর্তাদের সামনে ভেঙে পড়েন। এসময় তিনি সব ধরনের সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বাস দেন। ইডির চার কর্মকর্তা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
গত শুক্রবার সারাদিন ধরে ইডির কর্মকর্তারা পি কে হালদারসহ তার সহযোগীদের বিভিন্ন অফিসে হানা দেন এবং বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ উদ্ধার করেন। বর্ধমানের কাটোয়া, উত্তর২৪ পরগনা ও দক্ষিণ২৪ পরগনাসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পি কে হালদার, উত্তম মিত্র, প্রিতিশ হালদার ও প্রিতিশ হালদারের স্ত্রী ও জামাতা সঞ্জীব হালদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাদের সল্টলেকের সিজিও কম্প্লেক্সে নিয়ে আসা হয়।
মেডিকেল চেকআপের পর অনলাইনে ব্যাঙ্কশাল সিবিআইয়ের স্পেশাল কোর্টে কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়। পরে আদালতের কাছে পি কে হালদারসহ পাঁচজনকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করে ইডি। আদালত পাঁচজনকে ইডির হেফাজতে দেয় ও এক নারীকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আগামী ১৭ মে ব্যাঙ্কশাল সিবিআই স্পেশাল কোর্টে তাদের আবার হাজির করা হবে। মনে করা হচ্ছে প্রশান্ত কুমার হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় ২১ থেকে ২২ ধারায় মামলা নথিভুক্ত করা হবে।
বিশেষজ্ঞ মহল ধারণা করছেন, ইডি শুধু আর্থিক কেলেঙ্কারি তদন্ত করবে। বেআইনি পাসপোর্ট, ভিসা, আধার কার্ড, ভোটার আইডি কার্ড, প্যান কার্ড, রেশন কার্ড তৈরি করার জন্য সিবিআইয়ের হাতেও তাদের তুলে দেওয়া হতে পারে।
পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম