তোপের মুখে ইমরান খান

টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে ধর্ষণ খুব বেড়ে যাওয়ার জন্য নারীদের পোশাককে দায়ী করে তোপের মুখে পড়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান৷ সমালোচকেরা বলছেন, এমন মন্তব্য ‘বিস্ময়কর মূর্খতা’র নামান্তর৷
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা ইমরান খান বলেন, কোনো সমাজে অশ্লীলতা বাড়তে থাকলে পরিণামে ধর্ষণও বাড়ে৷ সাবেক এই ক্রিকেটার মনে করেন, (পাকিস্তানের) সমাজে ধর্ষণের ঘটনা খুব তাড়াতাড়িই বেড়েছে৷ পুরুষদের সংযত রাখতে নারীদের উচিত খোলামেলা পোশাক না পরা৷
সম্পর্কিত খবর
নারীদের শরীর ঢেকে চলার উপদেশ দিয়ে তিনি এ কথাও মনে করিয়ে দেন যে, পর্দা ব্যাপারটির মূল কথাই হলো প্রলোভন এড়ানো আর তা এড়ানোর মতো ইচ্ছাশক্তি সবার থাকে না৷ এদিকে ইমরানের এই মন্তব্যকে ‘তথ্যগতভাবে ভুল, অসংবেদনশীল এবং বিপজ্জনক’ আখ্যায়িত করে এখন পাকিস্তানে চলছে অনলাইনে স্বাক্ষর সংগ্রহের অভিযান৷ স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানের আয়োজকরা মনে করেন, একজন প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্য ধর্ষক এবং ধর্ষকবান্ধব ব্যবস্থাকে শক্তি জোগাবে৷
পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশনও প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে দেয়া বিবৃতিতে বলেছে, এর ফলে ধর্ষক, নিপীড়কদের রেহাই দিয়ে শিশু থেকে বৃদ্ধা পর্যন্ত ধর্ষণ, নিপীড়নের শিকার সব নারীর ঘাড়ে দোষ চাপানো হলো৷
পাকিস্তানে গত বছর এক নারীকে রাতে এক পেট্রোল পাম্পে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হতে হয়৷ নিজের সন্তানদের সামনে ধর্ষণের শিকার হওয়া ওই নারীকে এক পুলিশ কর্মকর্তা রাতে কোনো পুরুষ সঙ্গী ছাড়া বাইরে বের হওয়ার কারণে ভর্ৎসনা করলে দেশ জুড়ে শুরু হয় প্রতিবাদ-বিক্ষোভ৷
নারী এবং নারী অধিকার প্রশ্নে ইমরান খানের অবস্থান আগেও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে৷ গতবছর এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে তার উপস্থিতিতেই করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার জন্য নারীদের ‘অপকর্ম’কে দায়ী করেন এক ধর্মীয় নেতা৷ এমন অবৈজ্ঞানিক মন্তব্যের প্রতিবাদ না করায় তখনও ইমরানের তুমুল সমালোচনা হয়েছিল৷
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক নারী দিবসে র্যালি বের করে কট্টরপন্থিদের রোষানলে পড়েন পাকিস্তানের নারীরা৷ অনলাইনে ভুয়া, বিকৃত ছবি আর ভিডিও ছড়িয়ে শুরু করা হয় অপপ্রচার৷ র্যালির আয়োজকরা তখন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের হস্তক্ষেপ কামনা করেও কোনো সাড়া পাননি৷ সূত্র: ডিডব্লিউ, এএফপি
পূর্বপশ্চিমবিডি/আর